শিলিগুড়ি, ২ ডিসেম্বর: সিনেমা হলে অনেক স্মৃতি। অনেক গল্প থাকে জীবনের। এই খবরের শুরুতে পড়তে গিয়ে অনেকের তা মনেও পরে যাচ্ছে। কিন্তু সেই সিনেমা হলগুলি ধুঁকে চলছে। রাজ্যের সমস্ত জেলায় সিনেমা হলগুলোর প্রায় একই হাল। বন্ধ হয়ে গেছে বহু সিনেমা হল। আবার যেগুলো চলছে তাতে নেই দর্শক। সেগুলো মৃত্যুমুখে। এই পরিস্থিতিতে সিনেমা হলগুলোকে বাঁচানের আর্জি জানান, ইস্ট ইন্ডিয়া মোশন পিকচার এসোসিয়েশন। সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেন, অত্যাধুনিক প্রেক্ষাগৃহের যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে সিনেমা হলগুলো। আর এই সিনেমা হলের ব্যবসা শিল্প তথা পেশার সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েন। আরও পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখনো হলগুলোকে বাঁচানো যেতে পারে। তার জন্য সহানুভূতির দরকার। সদর্থক ভূমিকা দরকার। হল মালিকরা বলেন, কিছু নতুন নিয়ম কানুন করতে গিয়ে আটকে পড়তে হচ্ছে। হলের রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না। তার মধ্যে রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং আরো কতগুলো বিষয়। বেশিরভাগ সিনেমা হলগুলো পুরনো। সেগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোড়া সমস্যা। তার পাশাপাশি তা ভেঙ্গে নতুন করে করার ইচ্ছে নেই কাররই। অরিজিৎ দত্ত নামে এক সিনেমা হলের মালিক তথা অভিনেতা বলেন, “এই শিল্প বেঁচে থাকুক। সিনেমা হল একটা জীবন্ত ইতিহাস। এটা বেঁচে থাকুক সবার চেষ্টা ও সহনাভুতিতে।”
রাজ্যের ৮৯৩ হলের মধ্যে মাত্র ২২৩টি সিনেমা হল এখনো বেঁচে রয়েছে। তার মধ্যে ১৫০টির অবস্থা খুব ভালো নয়। ফলে এই নতুন নিয়মে আরো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও সিনেমা হলগুলোর মালিকরা বলছেন, কিছু ভুল নিজেদের রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার হয়নি হলগুলো। ঝা চকচকে করা যায়নি। তার মধ্যে রয়েছে শৌচালয়ের দুরবস্থা, খাবারের ক্যান্টিন, বসার জায়গা শব্দ এবং আলো সর্বোপরি পর্দা। ডিজিটাল যুগে এর থেকে পিছিয়ে পড়ায় হলমুখী হন না অনেকেই। সিনেমা হলগুলো খালি পড়ে থাকে, টিকিট বিক্রি হয় না। এদিন এক প্রতিনিধিদল এসেছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে দেখা করতে। ইস্ট ইন্ডিয়া মোশন পিকচার এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি পার্থসারথি দাও বলেন, ” উত্তরবঙ্গেও পঞ্চাশটিরও সিনেমা হল শুধু নামে চলছে। সেগুলো আর ভালো অবস্থায় নেই। এগুলোও রক্ষা করতে সবার সহযোগিতা চাই। আমাদের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সরলীকরণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।” এদিন তাদের পর্যটনমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলব। আমরাও চাই এই শিল্পটা বেঁচে থাকুক। তবে মানুষের নিরাপত্তার দিক এবং সরকারি কিছু নিয়ম মানতেই হয়। হারিয়ে যেতে বসেছে এই জিনিসটি। সংস্কৃতি বাঁচাতে, এটা বাঁচাতে চাই আমরা।”
অনেকেই মানছেন, আজকের দিনের মাল্টিপ্লেক্স যুগে সেইদিনের সিনেমা হলের অনুভূতি দিতে পারে না। তাই হল বাঁচুক দর্শকের মাধ্যমেই।
প্রতিনিধি: গিরিশ মজুমদার।