বালাসনে নদী খাদানে মৃতদের পরিবারে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা

শিলিগুড়ি, ৮ মার্চ: শিলিগুড়ির মাটিগড়ায় বালাসন নদী খাদানে বালি-মাটি তুলতে গিয়ে তিন তরুণ শ্রমিকের মৃত্যুতে পাশে দাঁড়ালো রাজ্য। পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি আহত তরুণের চিকিৎসার দায়িত্ব নিল। আর এদিকে অবৈধভাবে মাটি খননের জন্য ওই তরুণ শ্রমিকদের কাজে নেওয়াতে গ্রেপ্তার করা হল এক ব্যক্তিকে। ধৃতের নাম নরেশ সাহানি। তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছিল জোর করে কম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নাবালকদেরকে কাজে লাগানোর। প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে রাত এবং দিনের আলো ফোটার আগে এই কারবার চলতো তার নেতৃত্বেই। পুলিশ এবার তদন্ত করছে।

গত সোমবার সকালে বালাসন নদী থেকে বালিমাটি তুলতে গিয়ে দুই নাবালক সহ তিন জন পাড় ভেঙে চাপা পড়ে মারা যায়। মৃতরা হল রোহিত সাহানি (১৫), শ্যামল সাহানি (১৫) ও মনু কুমার (২০)৷ দুজনের বাড়ি মাটিগাড়া বানিয়াখাড়িতে। আরেকজনের বাড়ি বিহারে। মৃতদের মধ্যে দুজন নাবালক। এই দুর্ঘটনায় আশঙ্কাজনক আরও একজন কিশোর ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। বানিয়াখারি ত্রিপালি জোত এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, গর্তের মধ্যে নেমে তারা বালি তুলছিল। সেইসময় বালি চাপা পড়ে যায়। 

প্রত্যেকেই অসহায় পরিবার। কাজ ছাড়া চলত না। সেই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক নজির গড়ল সরকারের। মৃত ভিনরাজ্যের নিবাসী-সহ তিন শ্রমিককে রাজ্যের তরফে ২ লক্ষ টাকা পরিবার পিছু ক্ষতিপূরণ দেওয়া হল। এই ঘটনায় পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ এবং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা নিহতদের বাড়ি গিয়ে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন। পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

এতে কঠিন মুহূর্তে আর্থিক প্রতিকূলতা কিছুটা লাঘব হল বলেই মনে করছে অসহায় পরিবারগুলি। 

নিহত নাবালক রোহিতের মা রিতা সাহানি জানান, বেড়াতে এসে ছেলেকে হারিয়েছি। সরকার কঠিন সময়ে একদিনে এত বড় টাকা প্রদান করায় আর্থিক সমস্যা কিছুটা মিটবে। এদিকে নিহত শ্যামলের পরিবারেরও একই মত। নিহত যুবক মনু কুমারের ভাই সনুকুমার জানায়, ভাইয়ের তরতাজা প্রাণটা চলে গেল। বেআইনি জেনেও পেটের দায়ে খাদানে অবৈধ খননে নামতে হয়। বাড়িতে আরও এক ভাই ও বৃদ্ধ বাবা রয়েছে। সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ বাবদ এই এককালীন টাকা কাজে লাগবে। এদিন চেক প্রদানের পর শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী অত্যন্ত মর্মাহত এই ঘটনায়। তিনি শোক ব্যক্ত করেছেন। সরকার পাশে রয়েছে। রঙের উৎসবের মধ্যে এই কান্না মেনে নেওয়া যায় না। মৃত্যুর কাছে কোনও সহায়তা পরিপূরক নয়। মাটিগাড়া বিডিও শ্রীবাস মণ্ডল বলেন, পাশাপাশি আমরা আহত কিশোরের পরিবারকের পাশে দাঁড়াব। তাকেও সরকারি তরফ থেকে পঁচিশ হাজার টাকার মতো চেক তুলে দেওয়া হবে।