নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ

মালদা, ৭ মার্চ: নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে সদ্যোজাত শিশুসন্তান। সঠিক পরিকাঠামো এবং পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের।
এমনকি দেওয়া হয় হুমকি। খবর সংগ্রহ করতে বাধা সাংবাদিকদের। প্রশাসনের কাছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নার্সিংহোমের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। জানা যায়, মালদা জেলার সামসির মতিগঞ্জ এলাকার ওই নার্সিংহোমে গত বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পারো গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী বেগম প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে ভর্তি হয়।
রাতে তার সিজার হয়ে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সদ্যজাতর শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় পরিবারের লোকেরা চায় অন্য কোথাও তাকে স্থানান্তরিত করতে। কারণ ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসার কোন সঠিক পরিষেবা ছিল না।
কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সেই সদ্যোজাতকে ছাড়তে চাইছিল না। এদিকে ওই দিন রাতেই অন্য এক সদ্যোজাত শিশু সন্তানের মৃত্যু হয় জন্মের পরেই। সেই দেখে কার্যত জোর করে মৌসুমী বেগমের স্বামী নাসিম আখতার তার সদ্যোজাত শিশু কন্যাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সেখানে ওই শিশু মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এদিকে মৌসুমি বেগম তার ছোট্ট মেয়েকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে পড়ে।মৌসুমী বেগম নার্সিংহোমেই ভর্তি ছিল। তাকে সেখান থেকে ডিসচার্জ করে বিল মিটিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারের লোকেরা এলে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করে নার্সিংহোমের মালিক আনারুল হক।
এমনকি মৌসুমি বেগমকে নার্সিংহোম থেকে খাওয়ার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। নার্সিংহোমের ভূমিকায় সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগড়ে দেন মৌসুমী বেগম এবং তার পরিবারের লোকেরা। নার্সিংহোমে খবর করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয় সংবাদ মাধ্যম। ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত করা হয় সাংবাদিকদের।
এদিকে সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর দাবি ব্যাঙের ছাতার মতন চারিদিকে গজিয়ে উঠেছে এই ধরনের নার্সিংহোম।
যাদের নেই সঠিক কোন পরিকাঠামো। শুধুমাত্র মানুষের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে কারি কারি টাকার জন্য ব্যবসা করে এই ধরনের নার্সিংহোমগুলো। স্বাস্থ্য দপ্তর কেন এই ধরনের নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে নার্সিংহোম গুলিতে রোগী ভর্তির জন্য সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। মৌসুমী বেগমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে তারা এই নার্সিংহোমের কথা জানতো না। এক অ্যাম্বুলেন্স চালক চাঁচল পাড় করে তাদের এই নার্সিংহোমে নিয়ে আসে। যেখানে চাঁচলে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং একাধিক নার্সিংহোম রয়েছে। যদিও সমগ্র ঘটনায় কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সমাজসেবা নার্সিংহোমের মালিক আনারুল হক।

মৌসুমী বেগম বলেন, আমার মেয়েটা এখন খুব অসুস্থ। ওরা সঠিক সময়ে ছেড়ে দিলে এমন হতো না। আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। আমাকে খাওয়ার দেয়নি। এদের এখানে কোন ব্যবস্থা নেই।

মৌসুমী বেগমের স্বামী নাসিম আখতার বলেন, আমার মেয়ে জন্ম নেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে গেছিল। এখানে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় আমি মালদায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রথমে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ছাড়তে চাইনি। আমি জোর করে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছি। আমার মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এখানে আমার স্ত্রীর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেছে। গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে।