গিরিশ মজুমদার: শিলিগুড়ি, ২৯ সেপ্টেম্বর: প্রায় ৭ মাস পর শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। করোনা কালে জেলা সফর বন্ধ থাকলেও, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার দিয়ে ফের তা শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবারের সফরে অনেক কিছু দিলেন উত্তরবঙ্গ ও এখানকার মানুষের জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী চা সুন্দরী প্রকল্পেরও সূচনা করেন এদিন। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের রুগ্ন চা বাগানগুলোয় শ্রমিকদের নিখরচায় বাড়ি তৈরি করে দেবে রাজ্য। পাশাপাশি কামতাপুরি অ্যাকাডেমির জন্য ৫ কোটি টাকার অনুদানও তুলে দেন অতুল রায়ের হাতে। আর্থিক অনুদান দেন বক্সা দুয়ার মিউজিয়ামের জন্যও। রাজ্যজুড়ে ভগ্ন ও রুগ্ন মন্দিরগুলো সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে। মিলবে সেখানে বরাদ্দ। সেইসঙ্গে পুরোহিতদের তালিকা তৈরি হয়েছে।
এদিন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিভিউ মিটিং-এ করোনা পরিস্থিতিতে কেমন আছে উত্তরবঙ্গ, তা জানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি করোনা আবহের মধ্যে রাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তেমন কিছুই করছে না বলে এদিনও অভিযোগ করেছেন। নাম না করে বিজেপিকেও নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বললেন, আগে যখন উত্তরবঙ্গ আসতাম, দেখতাম কত অনুন্নত। এখন নিজেই চিনতে পারি না। এই প্রসঙ্গেই মমতা বলেন, এখন তো দেখছি কম কাজ করে দাঙ্গা লাগালে তার মূল্য বেশি হয়ে যাচ্ছে। কাজের কোনও মূল্য নেই।
তাই তিনি বৈঠকে বলেন, বিভেদের রাজনীতি করে অনেকেই রাজবংশী-কামতাপুরি সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্যান্যদের ঝামেলা বাঁধিয়ে ফায়দা লুটতে চাইছে। তবে বাংলায় সকলকে নিয়েই আমরা ভালো থাকবো।
এদিন প্রশাসনিক কর্তাদের কাছ থেকে সামগ্রিক কাজের খতিয়ান নেন মমতা। গ্রিভান্স রিড্রেসাল কিংবা সরকারি সুবিধা পেতে সেলফ ডিক্লেয়ারেশনের কথাও বারবার মনে করিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কাজ ফেলে যাবে না জানান সরকারি কর্তাদের। বলেন, সেলফ ডিক্লেয়ারেশনের জন্য মানুষের প্রয়োজনে যেন সরকার পাশে দাঁড়ায়। এটাই আমার সরকারের লক্ষ্য।
এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে অসাধারণ কাজ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীদের। তিনি বলেন, আপনাদের লড়াইয়ের জন্য আজ উত্তরবঙ্গ ভালো জায়গায় আছে। পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, মাইল্ড ও উপসর্গহীন করোনা সংক্রমিতরা সেফ হাউজে থাকুন। হাসপাতালের বেড খালি রাখতে হবে আশঙ্কাজনক রোগীর জন্য। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ছিল উল্লেখযোগ্য।
এদিন তিনি বৈঠক শুরুর আগে দুই জেলার জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন। তাদের প্রস্তাব দাবি দেওয়া এবং সমস্যার কথা শুনেন। এর মধ্যে রয়েছে জীবন আলিপুরদুয়ার পুর এলাকা প্রশস্তি করন এবং বানারহাটকে আলাদা ব্লক করার বিষয়েও।