কামড়ে দিল এশিয়ার বিষাক্ত সাপে কৌটোয় ভরে হাসপাতালে হাজির মাছুয়া

শিলিগুড়ি, ১৭ মে: সাপে কামড়ে দিয়েছিল বাগডোগরা কেষ্টপুর লাগোয়া এক ব্যক্তিকে। রাতের বেলায় ঘটনা ঘটে। মৎস্যজীবী বিমল দাস ঘোষপুকুর এলাকার চেংগা নদী থেকে মাছ ধরে ফিরছিলেন।সাইকেলে করে কেষ্টপুরের কাছে আসতেই সাইকেলের চাকা সাপের উপর উঠে যায়। আর সাপটি লাফিয়ে তার পায়ের উপর উঠে কামড়ে দেয়। কামড় দিয়ে সাপটি বেশিদূর যেতে পারেনি। অনেকটাই সচেতন ও সাহসী বিমলবাবু। তাই সাপটিকে ধরে কৌটায় ভরেন। এরপর বাড়ি এলে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে যায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তারা সাপটির দেখায়।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর ১২ ঘন্টা মেডিক্যাল রেখে এটপর ছেড়ে দেওয়া হয় ওই ব্যক্তিকে। কিন্তু জল্পনা শুরু হয় সাপটি নিয়ে। শিলিগুড়ির সাউথ দেশবন্ধূপারা কেয়ার ফর নেচারের সদস্য শংকর দাসের কাছে খবর যায়। সংকরবাবু সাপটি দেখে তো অবাক। কৌটার মধ্যে ভরা সাপটি এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ। নাম কৃষ্ণ কালাচ। ‘এই সাপ সাধারণত রাতে বের হয়। ভারত ছাড়াও বাংলাদেশে, নেপালে এই সাপটি রয়েছে। প্রচন্ড বিষাক্ত এই সাপের কামড়ে বহু লোক মারা যায়। এই সাপে কামড়ালে সময়মতো হাসপাতালে না নিয়ে গেলে বড় বিপদ।
এই সাপের কামড়ের ভ্যাকসিন নেই। ভেন্টিলেশন রেখে চিকিৎসা করলে অনেক সময় বেঁচে যায়। হাতে বেশি সময় পাওয়া যায় না। এই পরিবারটি অনেকটাই সচেতন। তাই সাপ চিনতে না পেরে ধরে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। সাধারণত সাপ নির্বিষ রয়েছে কিনা দেখে অনেক সময় ডাক্তাররা ভ্যাকসিন দেন। কিন্তু এই সাপটি কামড় দিলেও এই ব্যক্তিকে বিষ দিতে পারেনি। তার আগেই সাপটি ছুটে যায়। কিন্তু মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার চিনতেই পারেনি আসলে কি সাপে কামড়েছে! তাহলে হয়তো এতো তাড়াতাড়ি ওই ব্যক্তিকে ছুটি দিতে পারতো না।’
এদিকে ওই ব্যক্তিকে দেখে ও ক্ষত জায়গা দেখে অনেকটা নিশ্চিন্ত বিষ সেভাবে ফেলতে পারেনি সাপটি। শংকরবাবু বলেন, “বরাতজোরে বিপদ ঘটেনি। তবে এব্যাপারে চিকিৎসকদের অনেক সময় ভুল হয়। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়াটা জরুরী মনে করি। চিকিৎসকদের সাপ চেনাও দরকার। তাছাড়া কোন সর্পপ্রেমী কিংবা সর্পবিশারদদের পরামর্শ নিলে খারাপ হয়না। মেডিকেল কলেজকে এ বিষয়টা ভাবা দরকার। তাতে মানুষের জীবন ঝুঁকিতে কম পড়বে বলে মনে করি।সেই সঙ্গে ওই ব্যক্তিকেও বাহবা দিচ্ছি। বিষাক্ত সাপে কামড়ানোর পর তিনি কৌটোয় ভরে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তাই দেখে দিয়েছেন বলেই সাপটি চেনা গেল। অথবা অজানাই থেকে যেত মূল বিষয়টি। এবার সাপটি উদ্ধার করে যে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে।”