শিলিগুড়ি, ২ ডিসেম্বর: মাটিগাড়া থানার এক পুলিশের পদোন্নতি আটকে দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে পর্যটন মন্ত্রীর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন শিলিগুড়ির এক পুলিশপত্নী। সোমবার তিনি চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি করলেন। পুলিশ কর্মীর নাম সুঞ্জিত দত্ত। এদিন তার স্ত্রী প্রিয়া দত্ত অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্বামী নিচু স্তরের কর্মী। পুলিশের বড় কর্তারা আমার স্বামীকে কানধরে ওঠবস করিয়েছেন। তিনি এখন নার্সিংহোমে ভর্তি। তার পায়ে ৫ ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার হয়েছে।” এদিন পর্যটন মন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত হন। বলেন, “আমার বিশ্বাস মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটনমন্ত্রী বিষয়টি দেখবেন।”
তিনি লিখিত অভিযোগে জানান, এই ঘটনা পুলিশ-প্রশাসন নানা দপ্তরে জানানো হয়। সমস্যার সুরাহা হয়নি। সম্প্রতি একজন আইপিএস অফিসার স্বামীকে হেনস্থা করার জন্য কান ধরে উঠবস করান। এতে আমার স্বামী মানসিক এবং শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তাকে একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় গতকাল রবিবার পাঁচ ঘন্টার অপারেশন হয়েছে। এর পাশাপাশি তার পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়। ১৪ বছর ধরে চাকরি করার পর এএসএই থেকে এসআই করা হচ্ছে না। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণেই তার ওপরে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে নির্যাতন চালাচ্ছিলেন বলে মনে হচ্ছে।” পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এদিন চিঠি নেন। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
যদিও এনিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (সদর) অমিতাভ মাইতি বলেন, “মঙ্গলবার রাতে প্রফুল্ল রায় ও সঞ্জিত দত্তকে লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অনৈতিক কাজের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।”
তাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছিলেন খোদ কমিশনারেটের এসিপি (জোন ২, পশ্চিম) বিদিতরাজ ভুনদেশ। অন্যদিকে, এসিপির তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন তারা। পাল্টা এসিপি সেদিনের ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মীকে নিজের অফিসে ডেকে ইউনিফর্মে কান ধরে উঠবস করান বলে অভিযোগ তোলেন। অভিযুক্ত সঞ্জিত দত্তের স্ত্রী প্রিয়া দত্ত এসিপির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক, পুলিশ কমিশনার, মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন। প্রিয়াদেবী বলেন, “তোলাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন সাজানো। মুখ্যমন্ত্রী নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দেবেন এটা বিশ্বাস। কোনও দোষ না থাকা সত্ত্বেও আমার স্বামী সহ তিন জনকে এসিপি নিজের অফিসে ডেকে দীর্ঘক্ষন ওঠবস করান।” অবসরপ্রাপ্ত এনভিএফ কর্মী যোগেন রায় বলেন, “এসিপি যা করেছেন সেটা কখনই কাম্য নয়।”