শিলিগুড়ি, ১৯ ডিসেম্বরঃ হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে উদ্ধার বিমান সেবিকার মৃতদেহ। বুধবার সকালে গুরুগ্রামের ডিএলএফ ফেস-৩ এলাকার একটি পেয়িং গেস্টহাউস থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের নাম মিষ্টু সরকার(২৩)।
শিলিগুড়ির ভারত নগরের বাসিন্দা মিষ্টু বেসরকারি বিমান সংস্থা স্পাইস জেটে কাজের সুবাদে এক বছর থেকে গুরুগ্রামে থাকতেন। সেখানে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন। সেখানে ওই গেস্ট হাউসের মালিকের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। এই উত্তক্ত করার জন্যই মিষ্টু আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলে অভিযোগ ওঠে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিয়ানা পুলিশ।
হরিয়ানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুরুগ্রামের ডিএলএফ ফেজ ৩ অঞ্চলে এই ঘটনা।
মৃত মিষ্টু সরকার স্পাইসজেট বিমান সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন। তার পিতা হাউলু চাঁদ সরকার অভিযোগ করেছেন যে তার পিজির মালিক অমেরেন্দ সিংয়ের খারাপ আচরণের কারণে মন খারাপ করেছিলেন মেয়ে। মেয়ে তাকে ফোনের অভিযোগ করেছিল যে তিনি বাড়ির মালিককে ভয় পেয়েছিলেন।
পুলিশকে মেয়ের বাবা অভিযোগ করেন, “মঙ্গলবার দুপুর ২ টায় মেয়ে আমাকে ফোন করে পিজির মালিক, অমরেন্দর সিংয়ের বিরুদ্ধে হয়রানির কথা জানিয়েছিল। ওই রাতে যখন তিনি তার পিজিতে ফিরে আসেন বাড়ির মালিক কিছু বিষয় নিয়ে তাকে গালিগালাজ ও অপমান করে। ফোনে একথা বলার সময় মেয়ে কাঁদছিলেন। বাড়ির মালিক তার মোবাইল ফোন হ্যাক করেছিলেন এবং তাকে কোথাও যেতে দেননি। এমনও অভিযোগ রয়েছে। এফআইআর এ তিনি আরও বলেছেন, যে সিংহের নিয়মিত নির্যাতনের কারণে তাঁর মেয়ে শিলিগুড়িতে ফিরে আসতে চেয়েছিল। ফোনে তা জানায়। তারপরে মেয়ের ফোন কেটে যায়। কিছুক্ষণ পর ওই গেস্ট হাউসের মালিক অমরেন্দ ফোন করে জানিয়েছিল, মিষ্টু কিছু করেছে। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল তার সাথে কী ঘটেছে। তখন সে কোন উত্তর দেয়নি বাড়ির মালিক। এরপরই গুরুগ্রাম পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং কর্মকর্তাদের সাথে বিষয়টি তদন্তের জন্য অনুরোধ করা হয়। পুলিশ যায় তদন্তে। পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছিল তার দেহ। মঙ্গলবার রাত আড়াইটে নাগাদ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরদিন সকাল সাড়ে ৮টায় মিষ্টুর ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের ডেকে আনেন ওই গেস্টহাউসের নিরাপত্তারক্ষী। দরজা ভেঙে দেখা যায়, সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস জড়িয়ে ঝুলছেন তরুণী।এই ঘটনায় পুলিশ আপাতত বাড়ির মালিক অমরেন্দ সিংকে গ্রেপ্তার করেছে।
এই ঘটনায় শোকের ছায়া শিলিগুড়ির ভারত নগরে। তাদের সন্দেহ, বাড়ির মালিক অমেরেন্দ সিংহ তার সাথে কিছু করেছে। আর তাতেই মেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এই ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশকর্তা রাম নিবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, আমরা তার পিজি রুমের ভিতরে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার করতে পারি নি। তাকে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। আমরা এফএসএল বিশেষজ্ঞের সাথে অপরাধের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সমস্ত প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। আরও তদন্ত চলছে। সব দিক থেকে তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ নিয়েছে পুলিশ। এখানকার অন্যান্য কর্মী আবাসিকদের বক্তব্য শোনা হচ্ছে। এদিকে মেয়েটির দেহ শিলিগুড়ি আনা হবে।