Home রাজ্য উত্তরবঙ্গ শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র করার দাবি উঠছে

শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্র করার দাবি উঠছে

গিরিশ মজুমদার, শিলিগুড়ি, ২৮ ফেব্রুয়ারি: আগামী ২৬ মার্চ শিলিগুড়ি থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন পরিষেবা চালু হয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে মৈত্রী ট্রেন যাত্রার কথা ঘোষণা করে যান দুই দেশের রেল কর্তারা। এনজেপি ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এই ট্রেন সপ্তাহে দুদিন করে নিয়মিতভাবে চলবে। এনজেপিতে পাসপোর্ট চেক করে হলদিবাড়ি হয়ে ঢুকবে ট্রেন।পাসপোর্টধারীরা ট্রেনে করেই দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। এতে দু দেশের মধ্যে পর্যটক আনাগোনাও বাড়বে। দুদেশেই মানুষ বেড়াতে যেতে পারবেন। কিন্তু ট্রেন চালু হতে চললেও উত্তরবঙ্গের মূল প্রতিবন্ধকতা সেই ভিসা কেন্দ্র চালু হয়নি শিলিগুড়িতে।
বাংলাদেশের ভিসা আনতে উত্তরবঙ্গের মানুষদের যেতে হয় ৬০০ কিলোমিটার দূরে কলকাতা কিংবা ভিন রাজ্য গুয়াহাটিতে। অথচ তার চেয়ে কম সময়ে চলে যাওয়া যায় ঢাকায়। যে কারণে এই উত্তরবঙ্গ থেকে একমুখী যাতায়াত বেশি হয়। বেশিরভাগ পর্যটক ও যাত্রীরা দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশে যাতায়াত করেন। উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সীমান্ত ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে অল্প সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশে যান। এই পথে অনেক বেশি পর্যটক ও যাত্রী ভারতে আসেন। এর জন্য দায়ী ভিসা কেন্দ্র চালু না হওয়া। শিলিগুড়ি থেকে ঢাকা ট্রেন চালু হলেও সেই সমস্যা থেকে যাবে। পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা আশঙ্কা করেন ভিসা কেন্দ্র চালু না হলে উত্তরবঙ্গ থেকে কার্যত ফাঁকা ট্রেন বাংলাদেশে ছুটবে। পর্যটক ও উত্তরবঙ্গের মানুষদের বাংলাদেশে বেড়ানোর সহজ সুযোগ করে দিতে তাই শিলিগুড়িতে ভিসা কেন্দ্র করার জোড়ালো দাবি উঠছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলেন, শিলিগুড়িতে পাসপোর্ট অফিস রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোনও ভিসা কেন্দ্র নেই। তাই ভারতীয় পর্যটকদের এই ট্রেনে চাপতে গেলে কলকাতায় গিয়ে ভিসা করিয়ে তারপরে শিলিগুড়ি ফিরে এসে ট্রেন ধরতে হবে। এটা বড় হয়রানি ও টাকার অপচয়। এনিয়ে পর্যটন নিয়ে কাজ করা অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন,‌ ‘‌এই নতুন ট্রেনে দু’‌দেশ থেকেই বহু মানুষ যাতায়াত করবেন। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের বহু মানুষের পূর্বপুরুষ পূর্ববাংলা থেকেই চলে এসেছিলেন। তাদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে নিজের শেকড়ের খোঁজে বাংলাদেশ যাওয়ার ভালোরকম উৎসাহ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নামকরা সব খাবার চেখে দেখতে বা সেখানকার মানুষদের যে আতিথেয়তার আস্বাদ নিতেও অনেকে সেদেশে যেতে চান। তাদের পক্ষেও সরাসরি ট্রেন অনেকটাই সুবিধা করে দেবে। কিন্তু একটা বড় সমস্যা হচ্ছে শিলিগুড়ি থেকে ভিসা করাতে যেতে হবে কলকাতায়।’‌

হিমালয়ান হসপিটালিটি এবং ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‌দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলের সার্ক দেশগুলোর মধ্যে পর্যটন আরও জনপ্রিয় করে তোলার কথা বলছিলাম নানা ফোরামে। এই ট্রেনটি সেই দিশাতেই এগোনোর প্রথম ধাপ। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক দার্জিলিং, ডুয়ার্স বেড়াতে আসেন। এর মধ্যে সিকিমেও বাংলাদেশী নাগরিকদের যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফুলবাড়িতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে আসতে হত। এখন ট্রেনে তাদের অনেক সুবিধা হবে। কিন্তু এদিক থেকেও বহু মানুষ বাংলাদেশ যেতে চান। পর্যটন শিল্প তখনই সফল হয়, যখন দু’দিক থেকেই পর্যটক আসবেন বা যাবেন। এখানে তাই ভিসা কেন্দ্র করা জরুরি।’‌ আর এই ভিসার দাবি তাই জোড়ালো দাবি সব মহলেই। তারা বলেন, এই ট্রেন চলাচল সফল হতে শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা ব্যবস্থা করা সবার আগে দরকার।