Home রাজ্য উত্তরবঙ্গ শিলিগুড়িতে পানীয় জল সংকটের আশঙ্কা, মেয়রকে দুষলেন মন্ত্রী

শিলিগুড়িতে পানীয় জল সংকটের আশঙ্কা, মেয়রকে দুষলেন মন্ত্রী

শিলিগুড়ি, ২ ডিসেম্বর: শিলিগুড়ি পুরনিগমের গাফিলতিতে জল সংকটের মুখে পড়তে চলছে শহর। ফুলবাড়িতে পুরনিগমের একমাত্র পানীয় জল প্রকল্প জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সংস্কার নেই দীর্ঘদিন ধরে। নেই বিকল্প ব্যবস্থা যে কারণে ভেঙ্গে পড়তে পারে শিলিগুড়ি শহরের জল সরবরাহ ব্যবস্থা। বহু বছর থেকেই নজরদারির অভাবে এই প্রকল্পে তৈরি করা হয়নি বিকল্প পুকুর বা জলাধার। যে কারণে জরুরি সময়ে কিংবা সংস্কার করার সময়ে থমকে যেতে পারে জল উত্তোলনের কাজ। বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে দুষলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সোমবার তিনি সেচ দপ্তর ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে এই সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সমস্যার কথা উঠে আসে। একই ভাবে সেচ দপ্তর তুলে ধরে মহানন্দা ব্যারেজ সংক্রান্ত সমস্যা এবং ব্যারেজের কাজ করতে গেলে এই প্রকল্প জল পাবে না সে প্রসঙ্গ। তারা দাবি করেন বিকল্প যদি থাকতো এই প্রকল্পে তাহলে তাদেরকেও কাজ করতে সমস্যা হতো না। একই সঙ্গে জল পেত শিলিগুড়ি ও সংস্কারের কাজ করা যেত। এই মুহূর্তে মহানন্দা ব্যারেজের সংস্কারের কাজ চলছে। তার চেয়েও বড় বিষয় সংস্কার করতে গিয়ে তিনটি যন্ত্রাংশ কদিন আগে মহানন্দা নদীর মধ্যে পড়ে যায়। সেটা তুলতে গিয়ে বন্ধ করতে হচ্ছে ক্যানেলের লকগেট। পাশাপাশি খুলে দিতে হচ্ছে মহানন্দা ব্যারেজের সমস্ত গেট। যে কারণে বাঁধের মুখে জলাধার শূন্য হয়ে পড়ে। আর সেখানে রয়েছে পুরসভার জল তোলার পাম্প ও কুয়ো। সেখান থেকেই জল পাম্প করে নিয়ে যাওয়া হয় পাশেই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট এ। সেখানে জল পরিশোধন করে পাইপলাইন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শহরে। সেই জলই শহরবাসী পান করেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই ট্রিটমেন্ট প্লান্টের যে গ্রাউন্ড জলাধার রয়েছে সেখানেও পলি জমছে। প্রকল্প বন্ধ রেখে এই পলি সরাতে হয়। তাই এখানে বিকল্প পুকুরের কথা বলা হয়েছে। যে পুকুরে আগে থেকে জল তুলে রেখে প্রকল্পের কাজ সংস্কার করা যায় বাঁধের কাজও সংস্কার করা যায়।
১৯৯১ সালে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর ৫৩ কোটি টাকা খরচ করে ফুলবাড়িটে এই প্রকল্পটি করেছে। তারপর হাজার ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটি চালু হয়। এতদিনেও সেখানে জলাধার তথা পুকুর করতে পারল না। অথচ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পরিকল্পনায় তা রয়েছে। ২০০৫ সালে এর প্রয়োজন জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পরও বহুবার। তখনও বলা হয়, এই পুকুর না হলে শিলিগুড়িতে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দেবে। প্রকল্পের পাশাপাশি বাঁধের কাজেও সমস্যা হবে। তারপরও কিন্তু পুরনিগম এ বিষয়ে নজর দেয়নি। ফলে অদূর ভবিষ্যতে বড় সংকটের মুখে পড়বে। তা থেকে বাঁচাতেই এই মুহূর্তে সংস্কার ও পুকুর করা প্রয়োজন বলে জানান সেচ কর্তারা। উল্লেখ্য কাল মঙ্গলবার পুর নিগমে এনিয়ে বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা থাকবেন। এদিন পর্যটনমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘ বছরের মন্ত্রী ছিলেন অশোকবাবু। এখন তিনি শিলিগুড়ির মেয়র। অথচ তার কোনো হেলদোল নেই। দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়ালে আর চীন সফর করলে শহরবাসী জলের সংকটে ভুগবেনই।” এদিকে বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এতদিন তবে কি করেছেন মন্ত্রী। আমি করতে পারেনি তারাও তো করতে পারতেন।” মেয়র পাল্টা মন্ত্রীর ঘাড়ে দায় ও ব্যর্থতা চাপিয়ে দিয়েছেন।