শিবের মাথায় জল ঢালতে যাওয়ার পথে ১০ যুবকের মৃত্যু

পরিজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতাল চত্বর । শীতলকুচির গ্রামে এখন শোনা যায় কান্নার আওয়াজ। এই গ্রামেরই ১০ জন তরতাজা যুবক চোখের নিমিষে প্রাণ হারাল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে গেল সকলকে ছেড়ে। একথাই এখন আর বিশ্বাস করতে পারছেন না বাসিন্দারা। যে কয়েকজন জীবিত ফিরেছে তারাও হতভম্ব। সঙ্গের সাথীরা যে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে, তাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে।কিছুক্ষণ আগেই তো বেশ আনন্দ করতে করতে যাচ্ছিল জল্পেশ শিবের মাথায জল ঢালতে। এমন মৃত্যুতে শোকাহত গোটা রাজ্যের মানুষ। যেখানে যেখানে এই মর্মান্তিক খবর পৌঁছেছে সবাই মর্মাহত। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে নানা প্রশ্ন। এভাবে হেলায় প্রাণ হারানোর পিছনে দায়ী করা করা হয়েছে।
এই বর্ষার মধ্যে এক গাড়িতে গাদাগাদি করে যাচ্ছিল তারা। শুধু তারাই নয়, এমন অভিযোগ রয়েছে অনেক পুন্যার্থী গাড়ির মধ্যে জেনারেটর ডিজে লাগিয়ে হৈ-হুল্যর করতে করতে যায়। বিপদজনকভাবেই তাদের এমন যাত্রা। এ ব্যাপারেও নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে এখন।
শীতলকুচি এলাকায় তাই শুধুই শোকের পরিবেশ ও এলাকায় কান্না।
রবিবার ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন বারোটা। শ্রাবণ মাসের তৃতীয় সোমবারে শিবের মাথায় জল ঢালতে কোচবিহারের শীতলকুচি থেকে জলপাইগুড়ির জল্পেশের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন ২৫ জন পূর্ণ্যার্থীর একটি দল।
গাড়ির ভিতর চলছিল ডিজে । ছিল জেনারেটরের ব্যবস্থা। জানা গিয়েছে, কোনও ভাবে ওই জেনারেটরে শর্ট সার্কিট হয়। আর তার জেরেই ঘটে বিপত্তি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হন ১৬ জন। তাঁদের তড়িঘড়ি উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ১০ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
সূত্রের খবর, ২৫ জনের ওই দল ছিলেন একটি পিকআপ ভ্যানে। কয়েকজন পূণ্যার্থীর বক্তব্য অনুযায়ী, জামালদহ -চ্যাংড়াবান্ধা রাজ্য সড়কের ধরলা সেতু পার হওয়ার পরই জেনারেটর থেকে সেই গাড়িতে শর্ট সার্কিট হয়। তখনই ওই ষোলো জন গুরুতর জখম হন। গাড়ির চালকের তৎপরতায় তড়িঘড়ি আহতদের উদ্ধার করে চ্যাংরাবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ১০ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হতভাগা সেই মৃত তরতাজা যুবকরা হল

শুভঙ্কর বর্মন
স্বপন বর্মন
বাদল বর্মন
বিশাল তির্কি
বিভাস বর্মন
বিক্রম বৈশ্য
বাপি বর্মন
লক্ষণ বর্মন
মানব বর্মন
সুশান্ত বর্মন

এই ঘটনায় শোক বার্তা জানিয়েছেন অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সহ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অনেকেই মর্মাহত। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আসছন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে।
প্রথমে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসবেন । তারপর যাবেন মাথাভাঙা হয়ে শিতলকুচি।