লকডাউনে ভেঙে পড়েছে পাহাড় ডুয়ার্সেরও পর্যটন শিল্প

শিলিগুড়ি, ২১ মে: লকডাউননে পাহাড় পরিমাণ ক্ষতির মুখে পর্যটন শিল্প। ভেঙে পড়েছে উত্তরের হোম-স্টে ব্যবসা সহ পাহাড় ডুয়ার্সের গ্রামীণ পর্যটন শিল্প। আর এর সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার মানুষ এখন অসহায়। তাদের কথা ভেবেই এবার বিকল্প আয়ের পথে যাচ্ছে পর্যটন দপ্তর। একদিকে যেমন আর্থিক সহায়তা দেওয়া, অন্যদিকে এই পেশার সঙ্গে যুক্তদের পর্যটনের বাইরে কাজ দেওয়ার ভাবনা। বুধবার শিলিগুড়িতে এনিয়ে বৈঠক করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সেখানে ছিলেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থা থেকে শুরু করে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তারা কিছু প্রস্তাব তুলে দেন এরমধ্যে যেমন রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি এবং ইএমআই আটকে দেওয়ার বিষয়টি।গাড়ি থেকে ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে ঋণ নিয়েছিলেন অনেক পর্যটন ব্যবসায়ী ও গাড়ি চালক। তাদের ঋণ মুকুব নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি যে সমস্ত হোটেল লিজ নিয়ে চালাচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা সেই হোটেলগুলো বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে।
এ ব্যাপারে সিকিম সরকার এবং রাজ্য সরকার যৌথ আলোচনার দাবি তোলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে সবার আগে জোর দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের বন্ধ থাকা হোম-স্টেগুলো নিয়ে। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল ওই হোম-স্টে গুলোকে দের লক্ষ টাকা তিনটি ধাপে দেবে। সেই কাজ শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, হোম-স্টে সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কী হবে এনিয়ে প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। যাতে এই কর্মীদের ১০০ দিনের কাজে যুক্ত করা যায়। পাহাড় সমতল যেভাবে সরকারি প্রকল্প চলছে সেখানে অন্তত শ্রমিকরা আয়ের পথ বের করতে পারে সে কথা বলেন পর্যটনমন্ত্রী। জিটিএ এলাকায় এনিয়ে আলাদা ভাবে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী।
তবে বিকল্প আয়ের হিসেবে জেলায় জেলায় ভূমি, বনভূমি এবং জলাশয়কে ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিকল্প আয়ের করা হবে। কোথায় মাছ চাষ কোথায় ফুল চাষ কিংবা গাছের চারা তৈরি হবে।
সবচেয়ে বড় সমস্যা তিস্তা থেকে সংকোষ পর্যন্ত পর্যটনের সঙ্গে সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার জুড়ে দেড় লক্ষ মানুষ এখন ক্ষতির মুখে। তাদের জন্য বিকল্প আর কথা ভাবা হচ্ছে। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, যেখানে যেমন শক্তি রয়েছে তাকে আমরা কাজে লাগাব। হস্তশিল্প বাঁশ কিংবা হোগলাপাতা অথবা যেখানে অন্যান্য উপাদান রয়েছে সেখানে তাকে কাজে লাগিয়ে বিকল্প আয়ের পথ বের করতে হবে। এই করোনা পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়তে এখনই জয় করা কঠিন। তাই বিকল্প আয়ের করে বাঁচার পথ বের করতে হবে।

◆ছবি: জলদাপাড়া লাগোয়া একটি পর্যটন বাংলো।-গিরিশ মজুমদার