শিলিগুড়ি, ১০ ফেব্রুয়ারি: আর্থিক অনটনের সংসার। তারমধ্যে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েন রাজমিস্ত্রি লালচন রায়। থাকেন শিলিগুড়ির অদূরে ফাঁসিদেওয়ার একটি গ্রামে। জালাস নিজামতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের রহমুজোতের ওই বাসিন্দা রাজমিস্ত্রির কাজ করে কোনওমতে সংসার চালান। পরিবারে আর্থিক অনটন লেগেই রয়েছে। স্বামী–স্ত্রীতে নিয়ে পরিবারে সদস্য ৫ জন। গত ডিসেম্বরে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তখন থেকেই আরও বেশি আর্থিক সমস্যায় পড়েন। বন্ধন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন লালচনবাবু। এর পাশাপাশি গ্রামের আরও কয়েকজন থেকে টাকা নিয়ে মেয়ের বিয়ে দেন। এই অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই যেতে হয়েছে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে। এই আর্থিক অনটনের সংসারে তাদের ভাগ্যে রীতিমতো প্রথম পুরস্কার। এক কোটি টাকা জিতে নিলেন লালচন। ফুলবাড়ি বাজারে রাস্তার পাশের একটি কাউন্টার থেকে একপ্রকার জোর করেই তাকে লটারি ধরিয়ে দিয়েছিলেন পরিচিত দোকানদার। এর আগেও বেশ কয়েকবার লটারি কাটলেও বড় পুরস্কার মেলেনি। এবার ৬০০ টাকা দিয়ে তিনি লটারি কাটেন। তার মধ্যেই মিলে যায় প্রথম পুরস্কারের টিকিট। প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি তার টিকিটে এক কোটি টাকা মিলেছে। ভালো করে মিলিয়ে দেখেন এক কোটি টাকার ভাগ্য তার কপালে জুড়েছে। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে লালচলবাবু ফাঁসিদেওয়া থানায় এই লটারির টিকিট জমা দেন। লটারির টাকা ঢুকলে তিনি প্রথমে ঋণ মেটাতে চান। তারপরই ব্যবসা শুরু করবেন। তিনি বলেন, ‘স্ত্রীকে বাধ্য হয়ে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতে হয়। এরপর স্ত্রীকে আর রাজমিস্ত্রির কাজে পাঠাবো না। বেকার ছেলেকেও ব্যবসার জন্য টাকা দেব। হতাশা দূর হোক।’ কদিন আগেও লালচনকে কেউ চিনত না। এবার লটারিতে এক কোটি যেন রীতিমতো পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। এখন তাকে চেনে কোটিপতি রাজমিস্ত্রি বলে।
◆বিঃদ্রঃ: লটারির নেশা সর্বনাশা। লটারিতে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বহু পরিবার। এখনও হয়ে চলছেন। লটারির ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত অবকেই। তাই এই খবর কোনোভাবেই লটারি কাটার প্রতি উৎসাহ যোগাতে নয়। শুধুমাত্র একটি ঘটনা তুলে ধরা হল।
©গিরিশ মজুমদার