শিলিগুড়ি, ২৪ ফেব্রুয়ারি: কলেজে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনেক আবেদনকারীর যোগ্যতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাদের যোগ্যতার মূল্যায়নে কমিটি গঠন করল রাজ্য। তারা খতিয়ে দেখবেন এবং তা সমাধানের রাস্তা বের করবে। সোমবার শিলিগুড়িতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, ‘অনেকেই ৫৫ শতাংশের কম নম্বর পেয়ে আবেদন করেছেন। আবার অনেকে এই নম্বর পেয়েও পড়িয়ে যাচ্ছেন। অনেকে আবার এর থেকেও বেশি নম্বর পেয়েও বসে রয়েছেন। আমরা সবটা দেখে সমন্বয় সাধন করার চেষ্টা করছি। যার যোগ্যতা আছে সে নিয়োগ পাবেনই।’
উত্তরবঙ্গে এসে শিক্ষামন্ত্রী কয়েকটি বৈঠক করেছেন। এদিন উত্তরকন্যায় উত্তরবঙ্গের কলেজ বিশ্ববিদ্যালগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে বসেন। সেখানে ৭৩টি সরকার পোষিত কলেজ, ৮টি সরকারি কলেজ, একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সেখানে উপাচার্যদের পাশাপাশি ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী গৌতম দেব ও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বৈঠকে উঠে আসে কলেজগুলির সামগ্রিক সমস্যার প্রসঙ্গ। গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেন কিছুদিন আগে। সেখানে কিছুদিনের মধ্যে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবে। আপাতত অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবে। সার্চ কমিটি কাজ শুরু করে দিয়েছে। এদিকে কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয় কিনা তা শোনেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিন তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কলেজে অতিরিক্ত পড়ুয়া যাতে ভর্তি না নেওয়া হয়। রাজ্যে অনেক কলেজ হয়েছে। সেখানেও যাতে ফাঁকা না থাকে। তাই কলেজগুলিতে সমানুপাতিক হারে ভর্তি নিতে হবে। টিআইসি নিয়োগ নয়, স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগে জোর দেওয়ার কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। এদিন উত্তরকন্যায় এসে এই শিক্ষকরা স্থায়ীকরণ ও বেতন বৃদ্ধির দাবি জানান। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলার প্রতিনিধিরাও।
উল্লেখ্য, কলেজ শিক্ষকদের একছাতার তলায় আনতে স্টেট এডেড কলেজ টিচারের নাম দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরির স্থায়িত্ব থাকবে। ইউজিসি–র যোগ্যতামান অনুযায়ী ভাগ ও নিয়োগ হবে। এই অতিথি শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য দ্বিতীয় দফায় নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাদের ইতিমধ্যেই তথ্য যাচাই করা হয়েছে তাঁদের গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ইন্টারভিউ শুরু হয়েছে। যাঁদের ব্যাঙ্ক–সহ অনান্য তথ্যে কোনও ভুল নেই তাঁদেরই ডাকা হবে। আর যাঁদের তথ্য ঠিক নেই তাঁদের সময় দেওয়া হবে। এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেখাগেছে স্ক্রুটিনিতে অনেকে প্রমাণ দিতে পারছেন না। ব্যাঙ্কের নথি নেই। না তাঁদের জন্য কিছু করা জায়গা নেই। নিয়োগ নির্দেশিকায় যে যোগ্যত্যা রয়েছে সে অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হবে। যাদের যোগ্যতা আছে তারা প্রত্যেকেই নিয়োগ পায়, সুযোগ পান তা দেখা হবে। এর পাশাপাশি কলেজ এবং অতিথি শিক্ষকরা যে তথ্য দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখতেও এই কমিটি গঠিত।’ তথ্য যাচাইয়ের জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকারি হিসেবে রাজ্যে অতিথি শিক্ষকদের সংখ্যা সাড়ে ৮ হাজার। ইতিমধ্যেই সাড়ে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষকের তথ্য যাচাই হয়েছে। বাকি ২ হাজারের ক্ষেত্রে তথ্যে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নম্বর নিয়েই সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেকের স্নাতকোত্তরে প্রয়োজনীয় নম্বর নেই। এসব দেখে যাচাই করাতেই সময় লাগছে।’
©গিরিশ মজুমদার।