Home Top News ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত ছোট্ট সুমির করোনা জয়, শিলিগুড়ি থেকে ফিরল ঘরে

ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত ছোট্ট সুমির করোনা জয়, শিলিগুড়ি থেকে ফিরল ঘরে

শিলিগুড়ি, ৭ জুন: শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতাল থেকে ছুটি পেল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সাড়ে ৮ বছরের এক শিশু।কঠিন লড়াই করে করোনা জয় ওর। ভর্তির পর ১২ দিনের মাথায় শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতাল থেকে ছুটি মিলল ছোট্ট সুমি মণ্ডলের। মালদা থেকে ও যখন এসেছিল শরীরে প্রচন্ড জ্বর। কয়েকদিনের টানা চিকিৎসায়ও জ্বর নামছিল না। চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি মাটিগাড়াস্থিত কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকরা।শেষে একটা সময় সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে সুমি।

তড়িঘড়ি জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসে। তৈরি করা হয় মেডিকেল টিম। তারপর ওই টিমের অধীনেই শুরু হয় চিকিৎসা। দুদিনের মাথায় সুমির জ্বর নেমে যায়। এরপর আর বাড়েনি। স্বস্তি ফিরে চিকিৎসকদের। এরপর শুরু হয় সহায়ক চিকিৎসা। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। সুমির শরীরে আগে থেকেই বাসা বেঁধেছে মারণ ব্লাড ক্যান্সার। তাতে বাড়তি ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছিল। প্রতিমুহূর্তেই নজরদারি চালাতে হয়েছে ওর ওপর। বারবার লালারস নিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়েছে। তাতে নেগেটিভ আসে শেষ দুবারের পরীক্ষাতে। আর এতেই ছুটি মিললো।

লড়াইটাকে এক প্রকার চ্যালেঞ্জ নিয়েই নেমেছিল কোভিড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তর জেলা প্রশাসনও এদিন ছুটির সময় হাজির ছিলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় কুমার আচার্য জেলাশাসক এস পুণ্নবললম সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা। তারা হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান ছোট্ট সুমিকে। মালদার ইংলিশবাজার থানার সাগরদিঘী এলাকায় বাড়ি ওদের। গত ২৫ মে শরীরে করোনার লক্ষণ দেখা দেওয়ায় পরিবারের সদস্যরা নিয়ে আসে মালদা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তখনো ঠিকমতো করোনার চিকিৎসার পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। তার পাশাপাশি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় কিছু পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল। সেজন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে। রাতেই ভর্তি হয়। তারপর থেকেই চিকিৎসা।

শরীরে মারণ ক্যান্সার। কঠিন বাস্তব সামনে। তবুও এদিন করোনা বিজয়ী হয়ে ছুটির সময় তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া সুমি বলছে, আমি খুব ভালো আছি। এখানে সবাই আমাকে খুব যত্ন করেছে। সুমির মা মধুবালা মণ্ডল বলেন, মেয়ে যেন নতুন জীবন পেল এখানে এসে। জেলাশাসক এস পুণ্নবললম বলেন, কিছুদিন টানা লড়াই করতে হয়েছে আমাদের। খুব চিন্তায় পড়তে হয়েছে। কিন্তু আমরা এখন চ্যালেঞ্জকে জয় করতে পেরেছি। এজন্য চিকিৎসক দলের পাশাপাশি রোগীদেরও সহযোগিতা রয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় কুমার আচার্য বলেন, সুমি ক্যান্সার আক্রান্ত। তাই কয়েকটি ধাপে আমাদের চিকিৎসা করতে হয়েছে। শেষে মেডিকেল বোর্ড করে আমরা লড়াইয়ে জয়ী। উল্লেখ্য শিলিগুড়ি এই কোভিড হাসপাতাল থেকে এখনও একজনের মৃত্যু রেকর্ড নেই। এটা সাফল্য বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিক, জেলা প্রশাসন।

তাদেরও একই ভরসা এই ধারাবাহিকতায় নিয়ে যেতে চান তারা। যদিও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে জেলায়। চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিষেবা দিতে গিয়ে স্বাভাবিক কারণে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ায় তাই কাওয়াখালিতে ডিসান সারি হাসপাতাল হাসপাতাল করা হয়েছে কোভিড হাসপাতাল।
© hn শিলিগুড়ি