নিম্নমানের খাবারের প্রতিবাদ করায় দুই পড়ুয়ার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়

মালদা , ৩০ জুলাই। নিম্নমানের খাবারের প্রতিবাদ করায় দুই আবাসিক পড়ুয়াকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। মালদার বৈষ্ণবনগরের থানা এলাকার ঘটনা। সংকটজনক অবস্থায় ওই দুই আবাসিক পড়ুয়াকে চিকিৎসার জন্য মালদা শহরের গাবগাছি এলাকার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে । দুইজনেরই আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনায় ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, হোস্টেল সুপার সহ দশ জনের বিরুদ্ধে বৈষ্ণবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত দুই পড়ুয়ার পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে হোস্টেল সুপার শামসুজ্জোহাকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। এমনকি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। তারা ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বন্ধের দাবি তোলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত দুই পড়ুয়া ১৬ বছরের নাসিব রাইহান ও নাসিম আখতার। ওরা দুজনেই দশম শ্রেণীর ছাত্র। নাসিবের বাড়ি গাজোল থানার রামনগর এলাকায় এবং নাসিমের বাড়ি মানিকচক থানার সাহাবাতটোলা এলাকায়।
আক্রান্ত ছাত্রের পরিবার জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন বৈষ্ণবনগর থানার ১৬ মাইল এলাকার “টার্গেট পয়েন্ট আর” নামে একটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ আবাসিক পড়ুয়াদের কাছ থেকে মোটা টাকা মাসিক খরচ হিসাবে নিচ্ছে। কিন্তু ভাল পরিষেবা দেওয়া হয় না। নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার সকালে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়েছিল। আর সেই বাসি খাবারই আবার রাতে দেওয়া হয় । এনিয়ে ওই দুই ছাত্র প্রতিবাদ করে। এরপরই ওই স্কুলের হোস্টেল সুপারের নেতৃত্বে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ দুই পড়ুয়াকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। তাদের হাত-পা ভেঙে গিয়েছে। জখম দুই ছাত্রকে নার্সিংহোমে ফেলে পালিয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। গোটা ঘটনা জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক উজির হোসেন বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। রাতে হোস্টেল সুপারের উপস্থিতিতে কি ঘটেছে তাও পরিষ্কার করে বলতে পারব না। তবে ঘটনার অবশ্যই তীব্র নিন্দা করছি।
বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হোস্টেল সুপারকে আটক করা হয়েছে। পুরো ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।