এইচ. এন. ডেস্ক, ১০ ডিসেম্বর: এটিএম জালিয়াতি চক্রের অন্যতম পান্ডাকে গ্রেফতার করল কলকাতার গোয়েন্দা দপ্তরের ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশন।
রোমানিয়ার নাগরিক সিলভিউ ফ্লোরিন স্পিরিডনকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে
উদ্ধার জালিয়াতির সরঞ্জাম সহ দেড় লক্ষ টাকা।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন থেকে এটিএম জালিয়াতিকে কেন্দ্র করে বহু অভিযোগ জমা পড়ছিল যাদবপুর ও চারু মার্কেট থানায়। এরকম প্রায় ৮০ টি অভিযোগ জমা পড়ে। প্রত্যেকেরই অভিযোগ তাঁদের অজ্ঞাতসারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছে অচেনা কেউ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই টাকা তোলা হয়েছে নয়াদিল্লির বিভিন্ন এটিএম কাউন্টার থেকে। এই ঘটনায় এটিএম ব্যবহারকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
যাদবপুর ও চারু মার্কেট থানার থেকে এই কেসের তদন্তভার গ্রহণ করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরের ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশন। তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন ‘এটিএম স্কিমিং মেশিন’ বা ‘স্কিমার’ লাগিয়েছিল প্রতারকরা। স্কিমার একটা ছোট্ট যন্ত্র। সাধারণ চোখে ধরা পড়ার উপায়ই নেই। অথচ, কেউ সেই এটিএম কাউন্টার থেকে টাকা তুলতে এলেই এটিএমের মাইক্রো চিপে সংরক্ষিত যাবতীয় তথ্য জমা হয়ে যেত মেশিনে আটকানো স্কিমারে। এভাবে, এটিএম ব্যবহারকারীদের পিন নম্বরও জানতে পেরে যেত প্রতারকরা। সেই তথ্য ব্যবহার করেই বানিয়ে নিত জাল এটিএম কার্ড। তারপর জাল এটিএম কার্ডের সাহায্যে তুলে নিত টাকা।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পেরেছিলেন, দিল্লির মোট ৯ টি এলাকার ভিন্ন ভিন্ন এটিএম কাউন্টার থেকে টাকা তুলেছিল প্রতারকরা। দ্রুতই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয় ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশনের বিশেষ টিম। শুরু হয় কড়া নজরদারি ও প্রযুক্তি প্রহরা।
গতকাল দিল্লির মালভিয়া নগরের একটি এটিএম থেকে টাকা তোলার সময়ে একজন সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করে ব্যাঙ্ক ফ্রড সেকশনের বিশেষ টিম। রীতিমতন ফিল্মি কায়দায় তাকে ধাওয়া করে এবং একাধিক ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। সিলভিউ ফ্লোরিন স্পিরিডন নামে ওই ব্যক্তি রোমানিয়ার নাগরিক। এটিএম প্রতারণা চক্রের অন্যতম মাথা। তল্লাশি চালিয়ে দেড় লক্ষ নগদ টাকা ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয় ম্যাগনেটিক চিপ, ব্যাটারি, পিনহোল ক্যামেরা চিপ, ল্যাপটপ, এটিএম স্কিমার যন্ত্রের নানা কলকব্জা সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সিলভিউ-এর কয়েকজন শাগরেদকেও চিহ্নিত করেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। তাদের খোঁজও চলছে।