শিলিগুড়ি, ১০ মে: করোনার আবহের মধ্যে এক সুখবর। আরোও এক জনের করোনা জয়। এবার জয় করল এক দিনমজুর। তিনি ১০ দিনেই সুস্থ হন। রবিবার শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতাল থেকে ছুটি মেলে তার। কোচবিহারের উত্তর রামপুরের বাসিন্দা ওই যুবকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছিল। তারপর আলিপুরদুয়ার থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় শিলিগুড়ি মাটিগাড়াস্থিত রাজ্য সরকারের কোভিড হাসপাতালে। সেখানে সাপোটিং চিকিৎসা চলে। এবার সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেলেন ওই যুবক। যাওয়ার সময় এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। শুধু তাই নয় শরীরের সুস্থতার দিকে নজর দিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন রয়েছে শরীরচর্চা, যোগাসন এবং পুষ্টিকর আহার।সময়মতো ঘুমানো ও উঠতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভূমিকা নেয় এসব।
এদিন ছুটি দেওয়ার সময় এই করোনা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বিমল বর্মন বলেন, করোনার ওষুধ বলে কিছু নেই। এখানে আমরা সাপোটিং চিকিৎসা করেছি। পাশাপাশি রোগীর শরীরে অন্য কোনো লক্ষণ থাকলে তার চিকিৎসা করেছি। এতেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায় রোগি। তবে সংকটাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে একটু চিন্তা। সময়মতো এলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।এদিন কোচবিহারের এই যুবক ছুটি হওয়ায় এখান থেকে করোনা জয় করে ফিরলেন সবমিলিয়ে ১৮ জন।
এখন সেখানে ভর্তি রয়েছেন ৬ জন। ধীরে ধীরে দার্জিলিং জেলার কোভিড হাসপাতাল থেকে করোনা মুক্ত হচ্ছে। শিলিগুড়ির সারি হাসপাতাল ডিসানে নতুন করে কোনও করোনা পজিটিভ নেই। এখন যে ৬ জন রয়েছেন হাসপাতালে তার মধ্যে তিনজন আলিপুরদুয়ার জেলার। একজন কলকাতা থেকে আসা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক। অন্যজন মালদা থেকে নিয়ে আসা। রাজ্য সরকার প্রায় সব জেলাতেই করোনা হাসপাতাল তৈরি করেছে। তাই নতুন করে জেলার রোগীরা আর শিলিগুড়ি আসছে না।
এদিন ছুটি হওয়া কোচবিহারের বাসিন্দা গত ১ মে এখানে ভর্তি হন। তিনি আক্রান্ত হন দিল্লি গিয়ে। জানা গেছে দিল্লিতে এক কিডনি আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। কিন্তু লকডাউনে গিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেননি। আটকে পড়েন। তাই শেষে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ফিরছিলেন ওই চার জন। রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স আটকে ২৭ এপ্রিল তাঁদের কোয়ারান্টাইনে পাঠায় স্বাস্থ্য দপ্তর। তাঁদের সোয়াব পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখনই তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা যায়। এই চার জনের মধ্যে দু’জন কোচবিহারের বাসিন্দা হলেও অন্য দু’জনের বাড়ি আলিপুরদুয়ার জেলায়।
মেডিক্যালে পরপর তিনবার লালা রস পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার পরই এদিন একজনকে ছুটি দেওয়া জয়। এদিন বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় তাকে ফুল দিয়ে হাততালি দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা সংবর্ধনা জানান। ওই রোগী স্বাস্থ্যকর্মীদের এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ভূয়শী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এখানকার যত্ন আমাকে অভিভূত করেছে। তাই আমার কখনো মনে হয়নি আমি করোনা আক্রান্ত। সেইসঙ্গে আমি নিজে প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতাম। বাড়িতে গিয়ে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করব। লকডাউন মানুন, ঘরে থাকুন। তা বোঝানোর চেষ্টা করব।