শিলিগুড়ি ও ঢাকা, ৫ ফেব্রুয়ারি: ঢাকা থেকে সোজা শিলিগুড়িতে এবার ট্রেন চলাচল করবে। বাংলাদেশ সরকার চাইছে ভারতের সাথে বাংলাদেশের আরও দু’টি ট্রেন চালু করার। আজ বুধবার জানান বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজশাহীর মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে রাজশাহী থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত একটি ট্রেন চালাতে। যদিও ভারত চাইছে রাজশাহী থেকে হাওড়া পর্যন্ত একটি ট্রেন চালু করতে। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ থেকে শিলিগুড়িতে ট্রেন চলাচলের বিষয়। রেলমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এই পথ রেল লাইন প্রায় প্রস্তুত। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ৭ কিলোমিটার রেললাইন চালু হলে এ বছরেই আমরা ঢাকা থেকে শিলিগুঁড়ি ট্রেন চালু করতে পারব। এ ব্যাপারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রিভা দাশগাঙ্গুলিও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। রেলমন্ত্রী রাজধানীর রেল ভবনে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানান। তিনি আরও বলেন, যমুনা নদীর ওপর দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু ডুয়েল গেজ রেল সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন আগামী ১৪ মার্চ হতে পারে।
সরকার সড়ক পথে নির্ভরশীলতা কমিয়ে রেলপথের ওপর গুরুত্ব বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সেই দেশ থেকে আমরা ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কিনব। আগামী বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইঞ্জিনগুলো রেল মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করবে। এ ছাড়া এই জুনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন এবং আগামী বছরের মধ্যে আরও ২০টি ইঞ্জিন সংগ্রহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব রেল ব্রিজ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের ট্রেনের গড় গতি যেখানে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার সেই গতি ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আমাদের নতুন প্রকল্পগুলোতে এসব বিষয় যুক্ত থাকবে।
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যে ট্রেন চলবে, সেখানে ইলেকট্রিক ট্রেন প্রকল্প গ্রহণ করেছি। নারায়গঞ্জ-জয়দেবপুর এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত ইলেকট্রিক ট্রেন চালু করব। সড়কের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ট্রেনে ৩০-৩৫ ভাগ সক্ষমতা করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াত রেলকে ধ্বংস করেছে। রেল মন্ত্রণালয়ে ১৯৭৩-৭৪ সালের জনবল ছিল প্রায় ৭০ হাজারের মতো। সেই জনবল কমে এখন ২৭ হাজারে পৌঁছেছে। বিএনপি ক্ষমতায় এসে এক দিনে ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল। রেল যোগাযোগ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে ৪ ডিসেম্বর রেল মন্ত্রণালয় আলাদা করে প্রায় ৭৭টি প্রকল্প হাতে নেন। যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রায় ৩৬টি প্রকল্প চলছে। এর মধ্যে ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্প আর ৩টি হচ্ছে কারিগরি প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি মেগা প্রকল্পের অন্যতম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেললাইন যাবে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা হতে বরিশাল, খুলনা-মোংলা পর্যন্ত রেললাইনের উন্নয়নে কাজ চলছে। আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রেললাইন করা হবে। এই কাজ শেষ হয়ে গেলে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন চলবে। এদিকে ভারতের হলদিবাড়ি স্টেশন সাজানো হয়েছে। তবে প্রথমে যাত্রী চলাচল করবে না মালগাড়ি চলবে তা স্পস্ট করা হয়নি।
©গিরিশ মজুমদার ও মোকবার হোসাইন।