শিলিগুড়ি, ১৫ মার্চ: ঘরে দুই মেয়ে। ওদের পড়ালেখা ও বিয়েও দিতে হবে। দিনমজুর বাবা তাই আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন ছাগল পুষবেন। এরপর ওই ছাগল বিক্রি করে টাকা জমিয়ে মেয়েদের বিয়ে দেবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন মাটি করে দিল চোরের দল। ছাগলগুলিই চুরি করে নিয়ে গেল। এবার কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
কথায় আছে চোরের কোন ধর্ম হয় না। ফের এমন একটি ঘটনা ঘটল শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের জালাস নিজামতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের লালদাস জোতের আকালু রায়ের বাড়িতে। আকালু পেশায় একজন দিনমজুর। জানা গেছে বাড়িতে প্রায় কুড়িটি ছাগল দীর্ঘদিন ধরে পালন করছিলেন তিনি। চোরের ভয়ে ঘরের একপাশে একটি ঘরে তালা বন্ধ করে রেখে প্রতিদিন ঘুমিয়ে পড়তেন রাতে। এবার সেই ছাগল ঘরে হানা দিয়ে চোর নিয়ে গেল চোরেরা। সাতটি ছাগল চুরি হয়ে যায় তার। এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন দিনমজুরি করা সেই কৃষক আকালু রায়। এদিন এই ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, এতগুলো ছাগল রাখা হয়েছে কেন? উত্তরে তিনি বলেন, আমি দিনমজুরি ও অল্পস্বল্প চাষাবাদ করি। আমার দুই মেয়ে পড়াশোনা করছে। তাদের ভবিষ্যতের জন্য একসাথে ছাগল বিক্রি করে কিছু টাকা সঞ্চয়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু চোরেরা আমার সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। এই চুরির পর দিনমজুরের কাজ করতে যেতে পারছিনা। আমাদের এখানে কোনদিন এমন হয়নি। হঠাৎ করে আমার সাতটি ছাগল চোরেরা নিয়ে গিয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা হবে। এই ঘটনায় তিনি ফাঁসিদেওয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ এসেছে বাড়িতে। পুলিশকর্মীরা সেই পরিবারকে দেখে আশ্বাস দিয়েছেন আমরা ব্যাপারটা দেখছি এবং যদি চোর ধরা পড়ে আপনার ছাগল ফিরিয়ে দেওয়ার হবে। এই ঘটনায় জোর তদন্তও শুরু করেছে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ। লালদাস জোত গ্রাম মহানন্দা নদীর পাড়ে তথা ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাছের গ্রামে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল সেই ছাগল ঘরের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন আকালু রায় এবং দুই মেয়ে। তাদের স্বপ্ন চোরের দল শেষ করে দিয়ে গেল।