মালদা, ১৮ মার্চ: এ এক অদ্ভুত মেলা। যেখানে টাকার বিনিময়ে বেচাকেনা চলে না।
মেলাটিও বহু প্রাচীন। প্রায় তিনশো বছর ধরে পুরনো বলেও জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ কিছু মানুষ।
বসন্ত দেবতার উদ্দেশ্যে খাদ্যের বিনিময়ে সামগ্রী দেওয়া-নেওয়ার পালা চলে। প্রাচীন রীতি মেনে আজও টাকা ছাড়াই কেনাবেচা চাঁচলের শ্রীহীপুরে। ফাল্গুন সংক্রান্তিতে ঘটা করে পুজোর প্রচলন আজও রয়েছে। বেশ কিছুদিন এই মেলা চলে। বসন্ত দেবতার থানে পুজোকে কেন্দ্র করে বসে মেলা । মেলাটিও বহু প্রাচীন। প্রায় তিনশো বছর ধরে পুরনো বলেও জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ কিছু মানুষ।
এই মেলায় বসন্ত দেবতার উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদন করা হয়। খই,নাড়ু ও মুড়কি দেওয়ার রীতি রয়েছে।
মেলা প্রাঙ্গন থেকে সংগ্রহ করতে হয় ভোগের ওই সামগ্রী।ভোগের সামগ্রী কেনাকাটার ক্ষেত্রেও প্রাচীন রীতি আজও প্রচলিত রয়েছে।
টাকা পয়সা দিয়ে বিক্রেতারা ভোগের সামগ্রী বিক্রয় করেন না বিক্রেতারা। ভক্তেরা বাড়ি থেকে ধান,চাল অথবা সরিষা,গম ও যব সহ যেকোনো উৎপাদিত ফসল থলিতে করে নিয়ে আসেন। আর ওই নিয়ে আসা খাদ্য শস্যের বিনিময়ে ভোগ ক্রয় করা হয় বসন্ত দেবতার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, বহু যুগ আগে গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেন না।বাড়ির উৎপাদিত ফসলের উপর ভিত্তি করেই তারা জীবনজিবীকা নির্বাহ করতেন। নগদ অর্থ বেশিরভাগ সময় তাদের হাতে থাকত না। আর হয়তো সেই কারনেই তারা বাড়ির উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে বসন্ত দেবতার ভোগের সামগ্রী খই, মুড়কি ও নাড়ু দোকানিদের কাছ থেকে জোগাড় করে নিতেন। বসন্ত দেবতার উদ্দেশ্যে পুজো অর্চনা করলে চর্মরোগের হাত থেকে রেহাই মিলবে প্রাচীন এই বিশ্বাস তাদের অনেকের মধ্যেই ছিল। শ্রীহিপুরের ওই মেলাকে কেন্দ্র করে দুর দুরান্ত থেকে ভক্তরা ভোগ নিবেদনে সামিল হন।