শিলিগুড়ি, ২৮ নভেম্বর: আবার কাজ শুরু হচ্ছে ভোরের আলোতে। প্রকল্পের কাছাকাছি হেলিপ্যাডের পরিকল্পনা নেওয়ার পর থেকেই সমস্যা। হেলিপ্যাড হচ্ছে না তা আগেই জানানো হয়। তারপরেও নানা জট। এবার গাজলডোবায় ভোরের আলো প্রকল্পে এবার জট কাটছে। পরিবেশ আদালতের কপি দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই দাবি করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই পর্যটন কেন্দ্রে নির্মান কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে আর বাঁধা থাকছে না। পরিবেশ আদালতের থেকে জারি করা নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার পর্যটন দপ্তরের অধীনে কাজ শুরু হচ্ছে। পিপিপি মডেলে বিভিন্ন সংস্থা ও বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন দপ্তর নতুন করে কিংবা নির্মীয়মান কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’ আর এতদিন ধরে প্রকল্পের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সুভাষ দত্তের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করবে পর্যটন দপ্তর। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘আমরা পরিবেশকে যথেষ্ট ভালোবাসি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি পরিবেশের ক্ষতি করে কিছু না করার পক্ষপাতি। গাজলডোবায় এজন্য যাদবপুরের মতো সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছে। পরিবেশ আদালতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এতদিন যে বিরাট ক্ষতি হয়েছে তা জানিয়ে পরিবেশ আদালতেই সুভাষ দত্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।’
তিস্তার কোলে গাজলডোবায় ২০৮ একর জমিতে রয়েছে মেগা পর্যটন প্রকল্পটি। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। প্রথম ধাপে প্রকল্পের উদ্বোধন হয়ে গেছে। এই প্রকল্পের জন্য বাইরে মিলনপল্লী এলাকায় হেলিপ্যাড করতে চেয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে হেলিপ্যাড করা হবে না। এই প্রকল্প নিয়ে ২০১৬ সালে দেওয়া পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে এবছর আগস্ট মাসে অভিযোগ করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি ট্রাইবুন্যালে নালিশ ঠুকে জানান, গাজলডোবায় পক্ষিবিতান নাম দিয়ে পাখিদের জন্য একটি অভয়ারণ্য রাজ্য সরকারই ঘোষণা করেছে। সেই অভয়ারণ্যের মধ্যেই হেলিপ্যাড এবং মেগা পর্যটন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে বলে অভিযোগ করেন। বলেন, যেখানে পাখিদের ওড়ার কথা, সেখানে হেলিকপ্টার উড়তে পারে না। পাখিরালয়ের মধ্যেই নির্মাণ হচ্ছে, এটা পরিবেশ আইনের পরিপন্থী।’ পর্যটন প্রকল্পের জন্য যথাযথ ছাড়পত্রও সরকারের নেই বলে দাবি করেন তিনি। ট্রাইবুন্যালের প্রিন্সিপাল বেঞ্চ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের পর্যটন, বন এবং নগরোন্নয়ন দপ্তরের সংশ্লিষ্ট অফিসারদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে। সেই সঙ্গে হেলিপ্যাড, তিস্তা ক্যানালের উপর সেতু সহ সব নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয় গ্রিন বেঞ্চ। তথন থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ আদালতে দুবার পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র সহ রিট পিটিশন জমা করে রাজ্য। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘তার উপরেই গত ২০ নভেম্বর শুনানি হয়। তারপর ২৪ নভেম্বর মহামান্য আদালত আমাদের পক্ষেই নির্দেশ দেয়। তার ভিত্তিতেই আবার কাজ শুরু করব। আমার খুশি পরিবেশ আদালতের এই রিপোর্টে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের এই প্রকল্পে বাধা দেওয়া আমরা এবার সুভাষ দত্তের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলায় যাচ্ছি।’ এই প্রকল্পের কাজ নিয়ে এবার খুশি।