এবার পাহাড়ে হতে চলেছে আরেকটি “নতুন দার্জিলিং”

গিরিশ মজুমদার, শিলিগুড়ি, ২৯ ডিসেম্বর: দার্জিলিং পেতে চলছে আরেকটি দার্জিলিং। পরিকল্পনায় রয়েছে তেমনই। নাম হবে তার নতুন দার্জিলিং। পাহাড়ে এবার গড়ে উঠবে সেই ‘‌নতুন ‌দার্জিলিং।’‌ তার জন্য জায়গার খোঁজ শুরু করেছে পর্যটন দপ্তর। ইতিমধ্যে দেখা হয়ে গেছে বিকল্প শহরের জন্য জায়গা। চলছে তার সমীক্ষার কাজ। এই দ্বিতীয় তথা নয়া দার্জিলিং হলে পাহাড়ে পর্যটকদের আনাগোনা আরও বাড়বে। সেইসঙ্গে চাপ কমবে শৈল শহরের উপরে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনায় নতুন দার্জিলিংয় তৈরির কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে পর্যটন দপ্তর। পাহাড়ের জিটিএ বোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে সেই কাজ করা হবে বলে জানান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‌সোনাদা ও ঘুমের মাঝামাঝি জায়াগা রংবুলেই আশাকরি হয়ে উঠবে দ্বিতীয় দার্জিলিং। এই শহর তথা পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে সেখানে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে এবার রাজ্য থেকে পুরোপুরি ছাড়পত্র মিললেই পাহাড় এবং সেখানকার প্রশাসনিক বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’‌
পৃথিবী বিখ্যাত শৈলশহর দার্জিলিং। ব্রিটিশ উপনিবেশে ১৮৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন এই শহরকে। এই পাহাড়ে পুরোটাই যেন পর্যটনকেন্দ্র। হেরিটেজ টয়ট্রেন, সূর্যোদয়ের দেশ টাইগার হিল। উচ্চতম রেল স্টেশন ঘুম দেখতে সারা পৃথিবী থেকে পর্যটকরা আসেন। ফলে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ১০.৫৭ বর্গকিলোমিটারের এই পাহাড়ের কেন্দ্রবিন্দু অনেকটাই কম জায়গায়। সেখানে এত সংখ্যক পর্যটক ও প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দার চাপ সামাল দেওয়ার জন্য এখন আর জায়গা নেই। কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে দার্জিলিং শহর। নতুন করে সেখানে আর ঘরবাড়ি করার উপায় নেই। প্রয়োজনের চেয়েও অনেক বেশি হয়ে উঠেছে বাড়িঘর। এনিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবেশপ্রেমী, ভূতত্ববিদরা। বারবার এটা আলোচনায় উঠে এলেও বিকল্প পথ খোঁজা ছাড়া কোন উপায় নেই। এখন দার্জিলিংয়ে পর্যটকজের ভালো জায়গা দেওয়ার জায়গা নেই। পরিকাঠামোগত ও পরিসেবার দিক থেকেও বারবার তাই অভিযোগ উঠছে। সে কথা মাথায় রেখেই এই নতুন দার্জিলিং করা হবে। যেখানে পরিকল্পনামাফিক শহর ও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠবে। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে এবং পর্যটকদের সমস্ত ধরনের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই হবে এই বিকল্প দার্জিলিং। তবে এখানে কতটা জায়গার উপরে হবে তা সমীক্ষার পরেই জানা যাবে বলে জানান পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‌নতুন দার্জিলিং হলে আর্থ-সামাজিকভাবে পাহাড়ের বাসিন্দারা আরও এগিয়ে যাবেন। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে। তাদের বেড়ানো ও থাকা ও খাওয়ার জায়গা আমরা দিতে পারব।’‌ এই নতুন দার্জিলিং পথের পাশেই। এটা হলে এখান থেকে ঘুম, টাইগার হিল সব কিছু কাছে হবে। অনেকটাই ভিউ পয়েন্ট রয়েছে। এমনিতেই রংবুলে অনেক পর্যটক আসেন। সেখানে রিসোর্ট, হোটেল হোম স্টে রয়েছে। পাহাড়ের এই ছোট্ট জনপদ এবার শহরের রূপ নেবে। তেমনটাই পরিকল্পনা।