এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ফিন্যান্স অফিসার ছাড়াই চলছে!

শিলিগুড়ি, ১৫ মার্চ: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা নিয়ে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চাইছেন সব পক্ষই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশাপাশি আধিকারিক, কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইছেন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে রাজ্যপাল উদ্যোগ নিক। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আনন্দ বোসের কাছে চিঠিও যাচ্ছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রামকৃষ্ণ হল অফ রেসিডেন্সে বন্ধ করা হয়েছে মেস পরিষেবা। এখানে ২৪০ জন আবাসিক পড়ুয়া থাকেন। খাবার না পেয়ে সকাল থেকেই বিক্ষোভে নামেন অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিক্ষোভের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস এমনকী প্রশাসনিক কাজকর্মও এদিন হয়নি। এতেই এক এক করে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অভিযোগ উঠতে থাকে। আন্দোলনরত ছাত্রদের হয়ে দর্শন বিভাগের চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্র মহম্মদ রাজু, লাইব্রেরী সায়েন্সের দ্বিতীয় সেমেস্টারের ছাত্র সুপ্রিয় দাস বলেন, মঙ্গলবার রাতেই মেস বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। খাবার বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই, রেজিস্ট্রার সহ ফিনান্স অফিসার ও একাধিক উচ্চপদ শূন্য। ফলে প্রয়োজনীয় স্বাক্ষরের জন্য বকেয়া না পেয়ে মেস বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ।

পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।  
উল্লেখ্য, দেড় মাসের বেশি সময় উপাচার্য নেই। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারও নেই। তিনি অবসর নিয়েছেন। তারও আগে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসর নিয়েছিলেন স্থায়ী রেজিস্ট্রার। তারও আগে থেকে ফিনান্স অফিসারের পদ ফাঁকা। বিশ্ববিদ্যালয়েক কর্মচারী সমিতির সম্পাদক সুমন চ্যাটার্জি বলেন, উপাচার্য, রেজিস্ট্রার নেই, অর্থ আধিকারিক দীর্ঘদিন থেকে নেই। তিনজন একসঙ্গে না থাকায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রাতে রামকৃষ্ণ হস্টেলে নোটিশ জারি হয়েছে খাবার দেবে না। অর্থ আধিকারিক না থাকায় ৫৬ জন কর্মচারীর বেতন হয়নি। পিএফ, ইপিফেরে অফিসে ১৫ মার্চের মধ্যে জমা করেনি।

হস্টেলে নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেই পড়ুয়াদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা চাইব এই অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্যপাল হস্তক্ষেপ করুন। এদিকে হস্টেল চেয়ারম্যান তথা ডিন সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, ফিনান্স অফিসার নিয়োগ না হলে এই সমস্যা আরও বাড়তে থাকবে। আরও ১০টি হস্টেলে ৮০০ এর উপর পড়ুয়ার সমস্যা হতে বাধ্য। বেতন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এদিন আমরা দুই ডিন, জয়েন্ট রেজিস্ট্রার, ডেপুটি ফিনান্স অফিসার সবাই মিল পড়ুয়াদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সবচেয় বড় ৩১ মার্চের মধ্যে ইউসি না দিলে দেড় কোটি টাকার বোটানি বিভাগের প্রজেক্টের টাকার পুরোটাই ফেরত যাবে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সরাসরি হস্তক্ষেপ দরকার। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত পড়ুয়াদের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, রাজ্যপালের কাছে এনিয়ে ঠিঠি লেখা হবে।