উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ডাক্তার ভর্তি আইসোলেশনে

শিলিগুড়ি, ১৫ মার্চ: ঘুরতে গিয়েছিলেন বিদেশ। সেখানে বেশিদিন থাকেননি। দেশে ফেরেন। কিন্তু বিদেশ থেকেই ফিরে জ্বর, সর্দি, কাশি শুরু হয়। করোনার লক্ষণ রয়েছে আশঙ্কা করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালের এক চিকিৎসক শেষে নিজেই গিয়ে ভর্তি হন গিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে। মেডিক্যালের আইডিতে আইসোলেশ ওয়ার্ড করা হয়েছে। সেখানেই শনিবার থেকে ভর্তি রয়েছেন মেডিসিন বিভাগের ওই চিকিৎসক। তিনি সম্প্রতি স্পেনে বেড়াতে গিয়েছিলেন। করোনার জন্য ফিরে আসেন। কলকাতা হয়ে কদিন আগে শিলিগুড়ি আসেন। এরপরই শারীরিক অসুবিধার সম্মুখীন হন। সাধারণত বিদেশ থেকে ফিরলে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়। কোয়ারেন্টাইন নিয়ে যাওয়া হয়। ওই চিকিৎসক কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। শনিবার সকালে জ্বর বাড়ে। রাতেই আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এখানে সমস্তরকম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। এর আগেই মেডিক্যালের আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। ৬টি বেড সেখানে রয়েছে। ওই ওয়ার্ডে বিশেষ ফিল্টার প্রযুক্তিযুক্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা জোড়া হয়েছে। গঠন করা হয়েছে নোডাল টিমও। এই টিমে একজন সহকারি সুপার, একজন চিকিৎসক ও একজন ডিএনএস রয়েছেন। ভর্তির পর তাদের তত্ত্বাবধানেই রয়েছেন তিনি। রবিবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের সুপার ডা:‌ কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‌মেডিক্যালের আইসোলেশনে যিনি ভর্তি হয়েছেন, তার ন্যাজোফাইনসিয়াল সোয়াপ এবং রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার নাইসেড ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। রবিবার বিকেলেই তার রিপোর্ট এসেছে। তাতে করোনার উপসর্গ মেলেনি। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’‌ তাতেই স্বস্তি। অনেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন। চিকিৎসকের করোনা আক্রান্ত বলে রবিবার দিনভর জল্পনা শুরু হয়। শেষে নেগেটিভ রিপোর্ট এলে সব জল্পনার অবসান হয়।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস নিয়ে আগাম সর্তকতা অবলম্বনে মেডিক্যালে অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি খোলা হবে। এরপর আর ন্যাজোফাইনসিয়াল সোয়াপ এবং রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতার নাইসেড ল্যাবরেটরিতে পাঠাতে হবে না। এখানেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এবার থেকে গোটা উত্তরবঙ্গে কারও মধ্যে করোনার উপসর্গ ধরা পড়লে পরীক্ষা করে অতিদ্রুত সহায়ক চিকিৎসা শুরু করা হবে। এতে একদিকে একাধিকের শরীরে ছড়ানো আটকানো যাবে। তেমনি আগে থেকে চিকিৎসা শুরু করলে আক্রান্তের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ানো যাবে। এদিকে মেডিক্যালে আরও আইসোলেশন ওয়ার্ডও বাড়ানো হচ্ছে। ফাঁকা পড়ে থাকা লেপ্রোসি বিভাগকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।

©গিরিশ মজুমদার