উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মুখরোচক খাবারের দোকান করেন

শিলিগুড়ি, ১৯ ডিসেম্বর: বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বিক্রি করছেন ফুসকা। ভুগলে অনার্স বিক্রি করছেন ঝালমুড়ি। গবেষক ছাত্র ছাত্রী বিক্রি করছেন খিচুরি।কেউ বিক্রি করছেন ফুসকা, কেউ আবার ঝালমুড়ি আবার ঘুগনি। স্টল সাজিয়ে একদিনের জন্য এমন পাকা দোকানদার হয়ে উঠলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাদের মধ্যে কেউ গবেষক আবার কেউ ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী। শুনে বিশ্বাস না হলেও এটাই করলেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্নিভালে তারা এমন ফুটপাতে দোকান সাজিয়ে বার্তা দিলেন স্বনির্ভরতার। কোনও কাজ ছোট নয়, সেই বার্তাও দিলেন হাসি মুখে। বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় ক্যাম্পাস কার্নিভাল। এবার প্রথম কার্নিভাল হল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেটের ফুটপাতজুড়ে। এই কার্নিভালে সহযোগিতার হাত বাড়ায় বিএসএফ। তবে সঙ্গে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোফাম সহ বোটানি, নেপালি, বাংলা, ফুড টেকনোলজি সহ এমবিএ বিভাগও। শুরুতে এতটা সাড়া পাবেন ভাবতেই পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৪৩টি স্টল বসেছে। টেবিল পেতে কিংবা তাবুর তলায় দোকান সাজিয়েছে পড়ুয়ারা। দই–ফুসকার দোকান দিয়েছে ভূগোল বিভাগের ছাত্রী জয়া সরকার। বাড়িতে বানিয়ে খেলেও এই প্রথম দোকান দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে সে। উইমেন স্টাডিজের দীপা পাল অর্পিতা বারুই নিয়ে এসেছে নানা ধরণের পিঠা পায়েস। নেপালি বিভাগের মুসকান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের করুনা মুঙ্গের নিয়ে এসেছে, শেল রুটি, ফালে সহ নেপালি ঐতিহ্যের নানা খাবার দাবার। চিকেন কাবাব, ঝালমুড়ি, ঘুঘনি চাট বিক্রি করতে এসেছে ফার্মাসি বিভাগের পড়ুয়া অঙ্কনা মিত্র, অহেদ কালাম সহ এই বিভাগের আরও অন্তত ১০ জন। বাংলা বিভাগ আর গবেষক পড়ুয়াদের দেখা গেল হাঁসের মাংস, খিচুরি নিয়ে বিক্রি করতে। কয়েক ঘন্টার মধ্যে খাবার শেষ। এদিন এই কার্নিভাগ শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের পাশাপাশি হাতের কাজ নিয়ে হাজির হন মহিলারা। কেউ মাশরুম নিয়ে এসেছেন আবার কেউ জৈব চাষে সবজি। কার্নিভালে ভিড় ছিল ফেস আর্টের টেবিলে। একদিকে বিক্রিবাটা তারই মাঝে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের নাচ, গান সহ নানা উপস্থাপনা। এই কার্নিভালের কালচারাল কোঅর্ডিনেটর প্রজ্ঞামিতা দাশগুপ্ত জানান, ১৩২ জনের বেশি পড়ুয়া অংশ নেয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার নূপুর দাস বলেন, এখানে অনেক দিন থেকে সমবর্তন হচ্ছে না। আরও অনেক কিছুই বন্ধ। তারমধ্যে আমরা কার্নিভাল করে পড়ুয়াদের মনে উৎসাহ দিতে চাইছি। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা দোকানদার হয়ে সমাজের কাছে বার্তা দিলেন কোনও কাজ ছোট নয়। নেপাল ও ভুটানের স্টলও ছিল এদিন। পড়ুয়ারাও ব্যাপক খুশি। অল্প সময়ে এত বিক্রিবাটায় আগামীতে আরও সাজিয়ে গুছিয়ে করতে চান তারা।