আমি আর চাপ নিতে পারছি না, বলছেন সেই শিক্ষক

শিলিগুড়ি, ২৫ নভেম্বর: শিলিগুড়ি বয়েজ প্রাইমারি স্কুলের পোশাকের লোগো কাণ্ডে ভেঙে পড়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ ঘোষ।সোমবার তিনি ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।এদিন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর, সর্বশিক্ষা মিশন থেকে তদন্ত এসেছে। তাদের কাছে তিনি সমস্ত বিষয় বলেছেন। পদ্মর ছবি দিয়ে লোগো বানানো হয়েছিল তাদের কথাও তিনি বলেছেন। বিশ্বজিৎবাবু এদিন বলেন, আমি আর চাপ নিতে পারছিনা। আমি ভীষণ অসুস্থ। পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়েছে দায়িত্ব থেকে সরে যেত। আমিও তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি পদ থেকে সরে যাব। এব্যাপারে এই এস আইকে লিখিতভাবে আমি আজ-কালের মধ্যেই জমা দেব। আমি চাই কারো যাতে আর সমস্যা না হয় আমি আগের মতই সমস্ত শিক্ষকের পাশে থাকবো। যে স্বনির্ভর দল লোগো বানিয়েছে তাদের একটু ভুলের জন্য হয়েছে। কিন্তু তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই।তারা টাকা পয়সা পেয়ে যাবেন। আর আমার যদি ভুল হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। সমস্ত ভুল স্বীকার করে নিচ্ছি।
◆উল্লেখ গত ২৩ নভেম্বরে
শিলিগুড়িতে একটি “ফুল” নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। শিলিগুড়ি বয়েজ প্রাইমারি স্কুলের পোশাকের লোগোতে রয়েছে ভারতের জাতীয় ফুল “পদ্ম’র ছবি। স্কুল পড়ুয়াদের ইউনিফর্মে যে লোগো লাগানো রয়েছে তাতে পদ্মর ছবি। আর এনিয়েই শুরু হয়েছে কার্যত গন্ডগোল। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গত শনিবার ওই স্কুলে গিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি নেওয়া হয়। প্রতিবাদ জানিয়ে স্কুলের টিআইসিকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের পাশাপাশি জেলা তৃণমূলের সভাপতি রঞ্জন সরকার ওই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন তিনি বলেন, “এই স্কুলে এই বিজেপির প্রতীক নিয়ে রাজনীতি করছেন টিআইসি। তিনি বামপন্থী মনোভাপাপন্ন। ইচ্ছাকৃতভাবে স্কুলের টিআইসি বিজেপির প্রতীক ব্যবহার করে আরএসএস কার্যকলাপ করছেন।” বিষয়টি তৃণমূলের পক্ষ থেকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে জানানো হয়েছে।পাশাপাশি শিক্ষা দপ্তরকেও জানানো হয়েছে। রঞ্জনবাবু আরও বলেন, “অনেক ফুল থাকতে এই পদ্মফুল কেন?” যদিও ওই স্কুলের টিআইসি বলেন, “অন্য কোনভাবে নয়, ভারতের জাতীয় ফুল পদ্ম বলেই লোগোতে ওই ছবি রাখা হয়েছে। আমি তাদের কথা শুনলাম। আমার স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে জানিয়ে দেব।” বিজেপি’র শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী এর তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতের জাতীয় ফুলও ছাড়ছে না ওরা। নীল সাদা রঙে সাজিয়ে দিয়েছে স্কুল, সরকারি দপ্তর, রাস্তাঘাট। সব কিছু। সেখানে রাজনীতি নেই। অথচ ভারতের জাতীয় ফুলকে লোগো করাতেই তাদের এত চিন্তা।”
এদিকে এই পদ্মফুল নিয়ে রাজনীতি শুরু হওয়াতেও বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে প্রশ্ন। অনেকে পদ্মফুল দেওয়ার পিছনে কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছেন না। আর অনেকে বলছেন, এটা নাকি বিজেপির প্রতীক।