মালদা, ৩ আগস্ট: অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ওই নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ায় পরিবারটি হুমকির শিকার পাশাপাশি একঘরে করে রাখা হয়েছে। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের ঘটনা। অভিযুক্ত যুবক পলাতক। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
মেয়েটিও তার পরিবারের অভিযোগ, গত ২১ ফেব্রুয়ারি ওই যুবকের দিদি মেয়েটিকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে যুবকের দিদি তাঁর দিদার বাড়ি যাবে বলে বেরিয়ে যায়। সেই সময় অন্য ঘরে ছিল অভিযুক্ত যুবক। সে এসে ওই নাবালিকাকে জোর করে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে চাকু দেখিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। কাউকে ঘটনার কথা জানালে কিশোরীকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভয়ে কিশোরী বা পরিবার কাউকেই কিছু জানান নি। পরে কিশোরী অন্তঃস্বত্তা হতেই দিশেহারা হয়ে পড়েন পরিবার। থানায় অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নিলে উলটে হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁদের। গ্রামের কিছু প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও মাতব্বরের দল গ্রামেই শালিসি করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। শালিসিও বসে। কিন্তু অভিযুক্ত যুবককে উলটে আড়াল করা হয়। এতে নাবালিকার মা প্রতিবাদ করতে গেলে পাল্টা হুমকির মুখে পড়তে হয়। শুধু তাই নয়, গ্রামের মধ্যে একরকম একঘরে করে রাখা হয় তাঁদের। নজর রাখা হয় তাঁরা থানায় অভিযোগ জানাতে যাচ্ছে কিনা। ইতিমধ্যেই ৪ মাসের অন্তস্বত্তা হয়ে পড়ে ওই নাবালিকা। মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ে, গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। অগত্যা রবিবার গোপনে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান নাবালিকার মা। এরপরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত যুবক ততক্ষণে গ্রাম থেকে উধাও হয়ে গেছে। তবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কিশোরীর বাবা বলেন, আমরা গরিব । দিনমজুরির কাজ করে সংসার চলে। আমাদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এলাকার কিছু ধনী মানুষ তাঁর সঙ্গে সঙ্গে শাসক দলের কিছু নেতা আমাদেরকে প্রায়শই হুমকি দিচ্ছেন। এতদিন হুমকির ভয়ে পুলিশকে কিছু জানাইনি। পরে মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পুলিশের দ্বারস্থ হই। আমার মেয়ের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে যারা এভাবে সর্বনাশ করলো তাদের আমি শাস্তি চাই।
এদিকে অভিযুক্ত যুবকের মা বলেন, ছেলে বাড়িতে নেই। ও ঘটনায় জড়িত কি না জানি না। যদি এমন কিছু হলে ছেলে দায়ি। প্রমাণ হলে কিশোরীর আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করব।
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমান বলেন, ওই বুথে সকলেই বিজেপি। এধরনের জঘন্য অপরাধকে তৃণমূল কখনও প্রশ্রয় দেয় না। তৃণমূলের বদনাম করতে এসব ষড়যন্ত্র। পুলিশকে বলব ঘটনার সাথে যুক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে যেন কড়া পদক্ষেপ নেয়।
এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেদীয়া জানান, এলাকায় মেয়েদের কোনও সুরক্ষা নেই। শাসকদল এখন ধর্ষণ নিয়ে রাজনীতি করছে।গ্রাম-পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ থেকে সবাই তৃণমূলের দখলে। ওই ঘটনার নজর এড়াতে বিজেপিকে অযথা টানা হচ্ছে।